চৈত্রসংক্রান্তি
প্রাকৃতিক বা যেকোনো কারণে প্রাচীনকালের মানুষ যখনই বিপদে পড়েছে, তখনই সে বিপদ থেকে পরিত্রাণের জন্য কোনো এক অদৃশ্য শক্তির আরাধনা করেছে। আর এভাবেই তৈরি হয়েছে নানা দেবতা, পূজা, আচার, উৎসব। চৈত্রসংক্রান্তিও ভারতবর্ষের বাঙালি সমাজের তেমন এক উৎসব।
বাংলা সনের শেষ মাসের নামকরণ করা হয়েছে ‘চিত্রা’ নক্ষত্রের নামানুসারে। আদি গ্রন্থ পুরাণে বর্ণিত আছে, সাতাশটি নক্ষত্র যা রাজা প্রজাপতি দক্ষের সুন্দরীকন্যার নামানুসারে নামকরণ করা হয়। লোককথা অনুযায়ী, প্রবাদতুল্য সুন্দরী এই কন্যাদের বিয়ে দেওয়ার চিন্তায় উৎকণ্ঠিত ছিলেন রাজা দক্ষ। যোগ্যপাত্র পাওয়া না গেলে অনূঢ়া থেকে যাবেন তারা। অবশেষে বিধির বিধানে উপযুক্ত পাত্র পাওয়া গেল।
প্রসঙ্গত, মাস হিসাবে বৈশাখের প্রথম হবার মর্যাদা খুব বেশি দিনের নয়। বৈদিক যুগে সৌরমতে বৎসর গণনার যে পদ্ধতি প্রচলিত ছিল সেখানেও বৈশাখের সন্ধান মেলে। বৈদিক যুগের তথ্যানুযায়ী বৈশাখের স্থান ছিল দ্বিতীয়। তৈত্তিরীয় ও পঞ্চবিংশ ব্রাহ্মণের মতে বৈশাখের অবস্থান ছিল বছরের মাঝামাঝি জায়গায়। অন্যদিকে ব্রহ্মাণ্ড পুরাণে অনুষঙ্গপাদের একটি শ্লোক অনুসারে মাসচক্রে বৈশাখের অবস্থান ছিল চতুর্থ। তখন বাংলা সন বলতে কিছু ছিল না। ছিল ভারতীয় সৌরসন গণনা পদ্ধতি।
ফিরে আসি আমাদের মূল আলোচ্য বিষয় চৈত্রসংক্রান্তিতে।
করেছিলেন। চৈত্রসংক্রান্তির মেলা সাধারণত হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উৎসব। শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এইদিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পূণ্যকর্ম বলে মনে করা হয়।
চৈত্রসংক্রান্তিতে অনেক জায়গায় মেলা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। মেলায় কাঠের তৈজসপত্র, মাটির তৈরি নানা জিনিসপত্র, খেলনা, কাঁসা পিতলের বাসন-কোসন, পূজার নৈবেদ্য আর মিষ্টান্ন বিক্রি হয়।
তা বিতরণ করা হয়।